১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিনগর দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ গীতিনকশা

ঐতিহাসিক মুজিনগর সরকার

ঐতিহাসিক মুজিনগর দিবস


প্রায় দুশো বছর ধরে বিট্রিশ ঔপনিবশিক শাসনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হয়ে আসছিল বাঙালি জাতি। ১৯৪৭ সাল ভারত উপমহাদেশকে বিভক্ত করে চলে যায় ইংরজরা। সৃষ্টি হয় পাকিস্তান নামক এক নতুন রাষ্ট্রের। কিন্তু ইংরজদের মতাই তারাও শোষণ শাসন ও নিপীড়ন চালাতে থাকলো বাঙালিদের ওপর। পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত অত্যাচারে বাঙালির মনে তীব্র বিক্ষাভের আগুন জ্বলাতে থাকে। এক সময় সে আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দেশময়। বঙ্গবন্ধুর নামে এ সময় ইতিহাসের দরজা খুলে যায়। তিনি এক ঘাষণায় হিন্দু মুসলমান সবাইক বাঙালি করে তোলেন। অতঃপর ১৯৪৮ সালে ভাষার মিছিল থেকে শুরু কর ছেষট্টি সালের ছয়দফা আর স্বায়ত্বশাসনের ভেতর দিয়ে একাত্তরের সাত মার্চ রেসকোর্স ময়দানে নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে এক সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ২৫ মার্চ রাত বাঙালি জাতির ওপর অতর্কিত হামলা শুরু করল বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনতিক ঘনিষ্ট সহযোগীদেরকে ১৯৭০ এর সাধারণ পরিষদের নির্বাচনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সরকার গঠন করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াসহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ নির্দশনা প্রদান করেন। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা জাতির পিতাকে তাঁর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসা থেকে গ্রেফতার করে করাচিতে নিয়ে যান। শুরু হয় দেশ জুড়ে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার এবং জাতির পিতার নামানুসারে সে সরকারের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর সরকার। বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর রাজনৈতিক অন্যতম যোদ্ধা তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানসহ গঠিত হয় ৯ সদস্যর মুজিবনগর সরকার। আজকের এইদিনে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে এ সরকার শপথ গ্রহন করে মুজিব নামে চালিয়ে যান স্বাধীনতার যুদ্ধ।


১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহন 

করে বাঙালি কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড এবং কর্নেল আতাউল গণি ওসমানীকে সেনাপ্রধান করে বীরত্বের সাথে পরিচালনা করতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধ। এ সরকার বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরে বাংলাদশ সরকারের মিশন স্থাপন করেন। তাঁরা সরকারের পক্ষে প্রচারণা ও সমর্থন আদায়র চেষ্টা চালাতে থাকেন। যুদ্ধ পরিচালনার জন্য সরকার বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টর ও ৬৪টি সাবসেক্টর ভাগ করেন। এ সব সেক্টর পাকিস্তান সেনাবাহিনিতে সে সময়ের কর্মরত বাঙালি সেনাকর্মকর্তারা যোগদান করেন। প্রতিটি সেক্টরই নিয়মিতো সেনা, গরিলা ও সাধারণ যোদ্ধা ছিল। এ সব বাহিনিতে ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, নারী ও রাজনৈতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করছিল। এ ভাবে মুজিবনগর সরকারর বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তিক বুকে ধারণ করে দীর্ঘ ৯ মাসের দুর্বার সংগ্রাম চালিয় যান সর্বস্তরর বাঙালি মুক্তিযাদ্ধারা। এ যুদ্ধে শেষে ফিরে আস আমাদের স্বাধীনতা। ধন্য তুমি মুজিবনগর সরকার, ধন্য তোমার প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ